বাটারের ইতিহাস: প্রাচীন যুগ থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত

শুরুর দিনগুলো
বাটার, বাংলায় মাখন নামে পরিচিত, আমাদের খাবারের সঙ্গে জড়িত একটি মজার উপাদান। এর ইতিহাস অনেক পুরনো। প্রায় ১০,০০০ বছর আগে মানুষ যখন গরু-ছাগল পালন শুরু করেছিল, তখনই দুধ থেকে ক্রিম আলাদা করার পদ্ধতি তৈরি হয়। প্রথমদিকে, দুধের পাত্র অনেক সময় নাড়াচাড়া করতে গিয়ে ক্রিম থেকে মাখন আলাদা হয়ে যেত। সেখান থেকেই শুরু মাখনের যাত্রা।

পুরনো সময়ে বাটার
প্রাচীন মিশরে মাখন শুধু খাবার নয়, ত্বকের যত্ন এবং ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হতো। গ্রিক আর রোমানরা বেশি করে অলিভ তেল ব্যবহার করলেও, তারা উত্তর ইউরোপ থেকে বাটার সম্পর্কে শিখেছিল। ঠান্ডা অঞ্চলের লোকেরা মাখন খেয়ে শরীর গরম রাখত।

মধ্যযুগের কাহিনি
মধ্যযুগে মাখনের ব্যবহার আরও বেড়ে যায়। ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড আর ডেনমার্কের মতো দেশগুলোতে মাখন শুধু নিজেদের খাওয়ার জন্য নয়, বিদেশেও বিক্রি করা হতো।

বাটারের আধুনিক যুগ
১৮শ আর ১৯শ শতকে যখন মেশিন দিয়ে কাজ শুরু হয়, তখন মাখন তৈরি আরও সহজ হয়ে যায়। পাস্তুরাইজেশনের পদ্ধতি চালু হওয়ার পর এটি ভালোভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। এই সময় থেকেই মাখন সারা পৃথিবীতে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি হতে থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মাখনের এত চাহিদা ছিল যে এর বিকল্প হিসেবে মার্জারিন তৈরি করা হয়। তবুও আসল মাখনের স্বাদ আলাদা।

বাংলায় মাখনের স্থান
বাংলার রান্নায় মাখন খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরোটা, নান কিংবা মিষ্টি—সব কিছুতেই মাখনের স্বাদ লাগে। এখন তো বাটার ফ্রাইড চিকেন বা বাটার স্কচও অনেক জনপ্রিয়।

পুষ্টিগুণ ও বর্তমান প্রয়োজন
মাখন শুধু মজাদার নয়, এতে ভিটামিন এ, ডি, ই আর কে থাকে, যা শরীরের জন্য ভালো। যদিও অনেকেই ফ্যাটের জন্য বেশি মাখন খান না, তবু ঘরে তৈরি বা প্রাকৃতিক মাখনের চাহিদা এখনো অনেক।

শেষ কথা
মাখন শুধু খাবার নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে এটি আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। সময় বদলালেও মাখনের স্বাদ আর গুরুত্ব কখনো কমবে না।

Post a comment

Your email address will not be published.

0